প্রতি বর্ষাকালে জলাভসার সৃষ্টি ও আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণে মশা বৃদ্ধি পায়, যা ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ায়। বিশেষ করে ডেঙ্গুর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। ডেঙ্গু ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়ায় এবং তা গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। সিলভারস্ট্রিক মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডা. বিকাশ ভশিষ্ঠ বলেছেন, “ডেঙ্গু ছড়ানোর প্রধান বাহক এডিস ইজিপ্টি মশা, যা সকালের প্রথম দিকে এবং বিকেল শেষে সক্রিয় হয় এবং পরিষ্কার, স্থির পানিতে জন্মায়।”
ডা. বিকাশ ভশিষ্ঠ ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক টিপস দিয়েছেন:
১. স্থির পানি দূর করুন:
অল্পতম স্থির জল মশার প্রজননক্ষেত্র হতে পারে। প্রতি সপ্তাহে বালতি, কুলার, গাছের পাত্র, পাখির পুকুর ও পুরানো টায়ার পরিষ্কার করুন। জলাধার ও পোষা প্রাণীর পানির পাত্র ঢেকে রাখুন এবং ছাড়ানো নালা বা ছাদের জলনালা পরিষ্কার রাখুন।
২. মশার প্রতিরোধক ব্যবহার করুন:
DEET, পিকারিডিন বা লেমন ইউক্যালিপটাস তেলের ঘ্রাণযুক্ত প্রতিরোধক ব্যবহার করুন, বিশেষ করে মশার সক্রিয় সময়ে। শিশুদের জন্য নিরাপদ রোল-অন বা মশার প্যাচ ব্যবহার করুন।
৩. সুরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করুন:
লম্বা হাতা শার্ট, প্যান্ট, মোজা এবং বন্ধ জুতা পরুন। হালকা রঙের কাপড় বেশি উপযুক্ত, কারণ মশা গাঢ় রঙের কাপড়ের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।
৪. মশার জাল ও পর্দা বসান:
বাতাস চলাচলের পথ যেমন জানালা ও দরজায় মশারি লাগিয়ে মশার প্রবেশ রোধ করুন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শোয়ার সময় মশারি ব্যবহার আবশ্যক।
৫. ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো দ্রুত শনাক্ত করুন:
উচ্চ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, পেশী ও সন্ধি ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, র্যাশ ও বমির মত লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নিন। সময়মত চিকিৎসা জীবন বাঁচাতে পারে।
৬. সতর্ক থাকুন ও সমষ্টিগত উদ্যোগ নিন:
সরকারি স্বাস্থ্যবিষয়ক সতর্কতা মেনে চলুন এবং স্থানীয় ডেঙ্গু সতর্কতা সম্পর্কে আপডেট থাকুন। মশার প্রজনন কমানোর জন্য কমিউনিটি ক্লিন-আপ ড্রাইভে অংশ নিন বা আয়োজন করুন।
ডা. ভশিষ্ঠ জানান, এই সব সতর্কতা অনুসরণ করলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব এবং নিজেকে, পরিবার ও সমাজকে সুরক্ষিত রাখা যায়।
Post a Comment