ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের পাঁচটি সামরিক ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা গোপন রেখেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ–এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন বিস্ফোরক তথ্য। মার্কিন গবেষকদের স্যাটেলাইট রাডার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি এই প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলের উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ছয়টি ইরানি মিসাইল সফলভাবে আঘাত হানে কৌশলগত পাঁচটি ঘাঁটিতে।


প্রতিবেদনে জানানো হয়, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র গোপন রাখতে ইসরায়েল সরকার স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। এমনকি দেশটির সরকারী তথ্যে হামলার ব্যাপারে ‘নিম্নমাত্রার’ উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে ধ্বংস হয়ে গেছে একটি প্রধান বিমানঘাঁটি, গোয়েন্দা দপ্তর ও অস্ত্রাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনা।


যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা স্যাটেলাইট রাডার ডেটা বিশ্লেষণ করে জানান, যুদ্ধ চলাকালে তেহরানের ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) ঘাঁটি ও অন্যান্য কৌশলগত এলাকাগুলোর ওপর সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানে।



এর আগেও ৩৬টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইসরায়েলি স্থাপনায় ইরানি হামলার তথ্য প্রকাশ পেয়েছিল। তবে তেলআবিব থেকে আজও এসব তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয়নি। গবেষকদের মতে, এতে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না ইরানের হামলাগুলো কতটা নিখুঁত ও পরিকল্পিত ছিল।



দ্য টেলিগ্রাফ-এর তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপস্থিতি সত্ত্বেও ইরানের প্রায় ১৬ শতাংশ মিসাইল ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই সাফল্যের হার ক্রমেই বাড়ছে।


হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৪ জন ইসরায়েলি নাগরিক। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ, যাদের বসতঘর সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে।


এই ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি তথ্য গোপনের এ ধারা অব্যাহত থাকে, তবে সংঘাতের প্রকৃত চিত্র জানা এবং সমাধানের পথ আরও জটিল হয়ে উঠবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post