বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য জারিকৃত পোশাক পরিধান সংবলিত নির্দেশনার বিজ্ঞপ্তিটিকে ‘পরামর্শমূলক’ দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারা বলছে, এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অতিশয় কারুকার্যপূর্ণ পোশাককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অফিসে কারও পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা খর্ব হবে না। বুধবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।


বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত বিভিন্ন বয়সী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বয়সের পার্থক্যজনিত কারণে পুরুষ ও নারী উভয় সহকর্মীদের মধ্যে পোশাকের বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। পোশাকের ধরনের নানা পার্থক্য হেতু নারী-নারী ও পুরুষ-পুরুষ সহকর্মীদের মধ্যে মানসিক বৈষম্য দূর করে পারস্পরিক বোঝাপড়া (বন্ডিং) আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে অফিসে পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে আলোচ্য সার্কুলারটি জারি করা হয়েছে।


এতে বলা হয়, এটা একটি পরামর্শমূলক সার্কুলার। নারী সহকর্মীদের বোরকা ও হিজাব পরিধানের ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা বা নির্দেশনা আরোপ করা হয়নি। এই সার্কুলারের মাধ্যমে অতিশয় কারুকার্যপূর্ণ পোশাককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আশা করি এই সার্কুলারের মাধ্যমে অফিসে কারও পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা খর্ব হবে না।


এর আগে, গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ একটি লিখিত নির্দেশনা সব বিভাগ ও অফিসে বিতরণ করা করে। নির্দেশনায় জানানো হয়, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের এখন থেকে ফরমাল পোশাকে অফিস করতে হবে; নারী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ, ওড়না ও অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক পরতে হবে; শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস তথা ছোট হাতা ও ছোট দৈর্ঘ্যর পোশাক ও লেগিংস পরা যাবে না; আর পুরুষদের ফরমাল শার্ট, প্যান্ট, জুতা পরে অফিস করতে হবে। তারা জিন্স বা গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরে আর অফিসে আসতে পারবেন না।


জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর–৩ জাকির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভাগীয় মাসিক সভায় আলোচনার ভিত্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই সভার কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে ১১ নম্বর ছিলো– যৌন হয়রানি, কর্মকর্তা–কর্মচারিদের আচারণ ও পোশাক সংশ্লিষ্ট। সেখানে বলা হয়, নারী সহকর্মীদের প্রতি আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন, ২০০৩–এর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। যৌন হয়রানি-সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগ গঠিত কমিটিতে পাঠাতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বিষয়ে নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।


Post a Comment

Previous Post Next Post