সাত দফা দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের মূলপর্ব শুরু হয়। সমাবেশ পরিচালনা করছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পারওয়ার।



দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান দুপুর সোয়া ১২টায় সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। ডা. শফিকুর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করলে রাস্তার দু’পাশে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে তাকে স্বাগত জানান। এ সময় হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান জামায়াত আমির। মহাসমাবেশে আমিরের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।


সারাদেশে কর্মসূচির পর নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, মৌলিক সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার, অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ বাস্তবায়ন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ করছে জামায়াত।


এর আগে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় সমাবেশের প্রথম পর্ব। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাইফুল্লাহ মানসুর। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পরিচালনা করে সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠী।


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পাওয়া জামায়াত গত ১১ মাসে সব জেলায় কর্মী সমাবেশ করেছে। নির্বাচনী সমাবেশে পরিণত হওয়া এসব কর্মসূচি থেকে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।


সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকেই সারা দেশ থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। আজ সকালে মিছিল নিয়ে উদ্যানে উপস্থিত হন হাজারো নেতাকর্মী।


সকাল ১০টার দিকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। জায়গা না হওয়ায় উদ্যানের আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিতে থাকেন নেতাকর্মীরা।


শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, মৎসভবন, কাকরাইল, বাংলামোটর, সায়েন্সল্যাবসহ আশেপাশের এলাকায় জামায়াত নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে থাকেন।


সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ মঞ্চ করা হলেও এর চারপাশে সড়ক ছাপিয়ে দৈনিক বাংলা, কাকরাইল, গুলিস্তান, বিজয়নগর, শাহবাগ পর্যন্ত নেতাকর্মীদের জমায়েতের প্রস্তুতি নেয় জামায়াত। লাগানো হয়েছে মাইক।


জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন, সরকার ও বিএনপিকে বার্তা দেওয়া হবে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না। পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব না হলে নির্বাচন বর্জনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে।


জামায়াত সূত্রের খবর, বিএনপিকে ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠনে রাজি করাতে পুরো নির্বাচনই পিআর পদ্ধতিতে আয়োজনের দাবি তোলা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন ছাড়াও উচ্চকক্ষে পিআরে একমত রাজনৈতিক দলগুলোকে সমাবেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জামায়াত।


স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে জামায়াতে ইসলামী। আর ২০০৯ সালের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের প্রথম সমাবেশ করে দলটি।



Post a Comment

Previous Post Next Post