সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নতুন পোশাক কেনাকাটা ব্যস্ততা বেড়েছে চাঁদপুরের বিপনী বিতানগুলোতে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে পঞ্চমী তিথির মাধ্যমে এই উৎসবের যাত্রা শুরু হবে। পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন পন্য মূল্যের উপর কিছু ছাড়ের ব্যাবস্থা রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।


শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের পৌর নিউমার্কেট, পুরুবী মার্কেট, মদিনা শপিং কমপ্লেক্স, হাকিম প্লাজা, মীর শপিং কমপ্লেক্স, সৌদিয়া মার্কেট, বিউটি স্টোর, পৌর হকার্স মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপনী বিতান ঘুরে দেখাগেছে ক্রেতাদের ভিড়। যদিও সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পূজার কেনাকাটা শুরু করছেন। এখন চলছে শেষ সময়ের কেনাকাটা।


বড়দের পাশাপাশি মধ্যবয়সী এবং শিশুদের দেখাগেছে কেনাকাটায় ব্যাস্ত। নারীরা শাখা, সিঁদুর ও শঙ্খ কিনছেন হাসিমুখে। কেউ কেউ জুয়েলারি ও কসমেটিক ও পছন্দ করে কিনছেন বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির।


নারীরা শাড়ি, ছায়া, ব্লাউজ, গজ কাপড় বেশি কিনছেন। তেমনি নববিবাহিতা বা স্কুল কলেজের ছাত্রীরা আবার বিভিন্ন সুতি শাড়ি, থ্রি পিস, টুপিস, ওড়না, কামিজ, টপস কিনছেন। আর ছেলেরা বিভিন্ন ধরনের জিন্স প্যান্ট, টি শার্ট, শার্ট,  ফতুয়া, পাঞ্জাবী, পায়জামা কিনছে।


ব্যবসায়ীরা বলছেন-বিভিন্ন দোকানে কাপড়ের মানভেদে ছেলেদের পোষাকের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, ২০০-২০০০ টাকার মধ্যে। নারীরা ৪৫০-৩০০০ টাকার মধ্যে নিজেদের কেনাকাটা করতে পারছেন।


পৌর নিউ মার্কেট এর আশা ক্লথ স্টোর এর মালিক প্রদিপ পোদ্দার বলেন, এ বছর বেছাবিক্রি মোটামুটি ভালো। শেষ পর্যায়েও বিক্রি কিছুটা বাড়তে পারে।


প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু ত্রিভা জানান, সে পূজা উৎযাপন উপলক্ষে টপস কিনছে, জুতা, গলার হার, কানের দুল কিনেছেন।


শহরের পুরান বাজারের বাসিন্দা মুক্তা প্রভা জানান, কেনাকাটা করেছি পরিবারের সবার জন্য অল্প করে, আর্থিক সমস্যার মধ্যে থাকায় বেশি কিনতে পারিনি। পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশি।


সুপ্তী পোদ্দার নামে আরেক নারী বলেন, বাচ্চাদের জন্য জামাকাপড় নিয়েছেন। নিজের ও শাশুড়ির জন্য শাড়ী, পেটিকোট, ব্লাউজ এবং গজ কাপড় নিয়েছেন।


বিপ্লব দাস নামে যুবক বলেন, ছোট কাজ করি তাই তেমন সামর্থ্য নেই। যা আছে তা দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের জন্য কেনাকাটা করলাম। রিন্টু চক্রবর্তী আরেক যুবক বলেন, তিনি জিন্স টি শার্ট কিনেছেন। দাম বাজেটের মধ্যে পেয়েছেন।


বাবুল সাহা নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আগে পূজার একমাস আগে থেকেই আমাদের প্রস্তুতি চলতো কেনাকাটা ও পূজার সামগ্রী কেনার জন্য। এখন তো আর আগের সেই ভাব নেই। তিনি নিজে ধূতি ও পাঞ্জাবি আর স্ত্রীর জন্য শাড়ী নিয়েছেন।


জুয়েলারি দোকান মালিক রবিন জানান, শাখা, সিঁদুর ও শঙ্খ বিক্রি হয়েছে ভালো। আর সিটি গোল্ডের সেইন, গলার হার লকেট, কানের দুল ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।


নিউ মার্কেট এর দোকান মালিক জনি দাস বলেন, এবার পূজা উপলক্ষে ভালো বিক্রি করেছি। বৃষ্টির জন্য মাঝে মধ্যে ক্রেতা কম হয়েছে। গ্রামের ক্রেতা কম এসেছে। এবছর সিনথেটিক আইটেমর দাম একটু বেশি। যেমন টাংগাইলের শাড়ি, সিল্ক সুতি, প্রিন্ট শাড়ি, জামদানী, কসর, সাউথ সিল্ক, অরগেন্জা ভালো চলতেছে। আমরা বিভিন্ন ধরনের পণ্যের উপর কিছু মূল্য ছাড় রেখেছি।


চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মার্কেটগুলোর সামনে পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটির সাথে সমন্বয় করে মন্দিরসহ আশপাশের নিরাপত্তা জোরদার থাকবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post