২০০১ সালে ২০ বছর মেয়াদি বন্ধুত্ব-সহযোগিতার একটি চুক্তি করে রাশিয়া ও চীন। যদিও দেশ দুটির মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও পুরোনো। মূলত বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের যে অর্থনৈতিক ও সামরিক বলয় সেখান থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতেই এই দুই শক্তিধর দেশ একত্রিত হয়। রাশিয়া ও চীন বন্ধুত্ব যে কতটুকু গভীর তার প্রমাণ মেলে রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে। রাশিয়ার সেই দুর্দিনে এশিয়ার আরেক দেশ ভারতও বরাবরের মতই রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক বাজায় রেখেছে।


তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মুক্ত হয়ে আলাদা এই ত্রিশক্তি এক হওয়ার পেছনে মূল সমস্যা শুধু ভারত ও চীনের দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্ক। কিন্তু এবার বুঝি পাশার ঘুটি উল্টাতে বসেছে। এশিয়ার এই দুই শক্তির দীর্ঘদিনের শত্রুতা ঘুচিয়ে দিচ্ছে সয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কড়া পদক্ষেপে যখন সারা বিশ্বই ট্রাম্পের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হচ্ছে তখন নিজেদের কঠোর অবস্থান ধরে রেখেছে চীন ও ভারত।


কোনো ধরনের চাপ ও হুমকিকে গুরুত্ব না দিয়ে একজোট হতে চলছে বিশ্বের অন্যতম তিন মহাশক্তি রাশিয়া-চীন ও ভারত। মার্কিন বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে একসঙ্গে কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে এই ত্রিশক্তি যা বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।


শুল্কনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যেই চীন যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৩১ আগস্ট চীনের তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন নরেন্দ্র মোদি।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। ফলে তিন শক্তির ক্ষমতাধর তিন নেতা এখন একই ছাতার নিচে আসছেন এক ট্রাম্পকে আটকাতে। প্রশ্ন হলো বর্তমান বিশ্বে এই তিন শক্তিধর দেশের পাল্টা আঘাত কি সইতে পারবে আমেরিকার অর্থনীতি? নাকি সমাঝোতাতেই যেতে হবে ট্রাম্পকে।


বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা নীতির কারণে বিশ্বের কূটনৈতিক ভারসাম্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত সুস্পষ্ট হচ্ছে। এই মুহূর্তে চীন, রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে নতুন এক মেরুকরণ গড়ে উঠছে। যা ভবিষ্যতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।



Post a Comment

Previous Post Next Post