গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে। এবার শ্রীপুরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল এক যুবকের। পুলিশ ইতিমধ্যে দুইজনকে আটক করেছে।


শুক্রবার রাত ৩টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক। নিহত যুবকের নাম জুয়েল (২৫), বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে।


ওসি বারিক জানান, প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, গভীর রাতে মাওনা উড়ালসেতুর নিচে একটি অস্থায়ী চায়ের দোকানের পাশে কয়েকজন যুবক ঘুমাচ্ছিলেন। চটের বিছানায় শোয়া নিয়ে নিহত জুয়েল এবং আটক রাকিব-রবিনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তির সময় রাকিব সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে জুয়েলের বুকে আঘাত করে। রাকিবকে আটকাতে গেলে রবিনের হাত কেটে যায়।


আহত জুয়েলকে স্থানীয়রা দ্রুত মাওনা চৌরাস্তার একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়, যেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে টহলরত পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাকিব ও রবিনকে আটক করে। ওসি বারিক জানান, নিহত ও আটককৃতরা সবাই ভাসমান এবং মাওনা চৌরাস্তা এলাকাকেন্দ্রিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।


এর আগে, গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ড শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে দেখা যায়, ৭ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তি চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে এক নারীর সঙ্গে বিবাদে জড়ান এবং তাকে আঘাত করেন। এসময় নারীর পক্ষ নিয়ে একদল দুর্বৃত্ত ধারালো চাপাতি হাতে বাদশা মিয়াকে আক্রমণ করে। বাদশা দৌড়ে পালিয়ে যান, আর রাস্তার পাশ থেকে এই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। সন্ত্রাসীরা তুহিনকে ভিডিও মুছে ফেলতে বললেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। তখনই তাকে ধাওয়া করে মসজিদ মার্কেটের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।


পুলিশের তথ্যমতে, বাদশা মিয়ার গ্রামের বাড়ি শেরপুরে এবং তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তদন্তে জানা গেছে, যে নারী বাদশার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন, তিনি একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য, যারা ফাঁদ পেতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।


Post a Comment

Previous Post Next Post