রাতের আহার সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ঘরের বাসিন্দারা। গভীর রাতে হঠাৎ ঘরের উঠানে মোরগের ডাক শোনেন। কেউ হয়তো মুরগি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন কিংবা মুরগির খোপে শিয়াল ঢুকেছে ভেবে খোলা হয় ঘরের দরজা। মুহূর্তেই ৭-৮ জন ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েন ঘরে। এরপর ঘরের ভেতরেই কুপিয়ে হত্যা করেন এক ব্যক্তিকে। গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবনিয়ার সেগুনবাগিচা এলাকায়।


নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (৪৫)। তিনি উপজেলার মাঝেরঘোনা এলাকার নুর আহমদের ছেলে। তবে প্রায় এক যুগ ধরে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে সেগুনবাগিচা এলাকার পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করে আসছেন।


এই হত্যার ঘটনাটিতে পুলিশ আজ রোববার সকালে দুজনকে আটক করেছে। তাঁরা হলেন—শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবনিয়ার সাপেরগাড়া এলাকার মনছুর আলম (৪৫) ও জকিরুল ইসলাম (৫৫)।


স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঘরে ঢুকে জসিম উদ্দিনের পেটে, কানে, ঘাড়ে ও মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। ঘটনার সময় ঘরে থাকা জসিম উদ্দিনের স্ত্রী দৌড়ে পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁর জ্ঞান ফেরার পর তিনি প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানান। এরপর প্রতিবেশীরা গিয়ে ঘরের ভেতর জসিমের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।


নিহত জসিমের স্ত্রী সেলিনা আকতার বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্রের সঙ্গে মোরগটি নিয়ে এসেছিলেন। মোরগ ডাকার শব্দে তিনি ভেবেছিলেন কেউ খোপ থেকে মুরগি নিয়ে যাচ্ছেন। তাই ঘরের দরজা খোলেন। তবে দরজা খুলতেই ঘরে ঢুকে ৭-৮ জন ব্যক্তি তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।


তিনি বলেন, তাঁর একমাত্র ছেলে মালয়েশিয়ায় থাকেন। ওই ছেলের সঙ্গে স্থানীয় এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে ওই তরুণী সম্প্রতি ঘর থেকে পালিয়ে যায়। এরপর ওই তরুণীর পরিবার তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে। একই ঘটনার জেরে তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।


স্থানীয় শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আহমদ শফি বলেন, বসতঘরে ঢুকে জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যার খবর পেয়ে আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশের একটি দল। তারা লাশটি উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।


জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


Post a Comment

Previous Post Next Post